news-details image

ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে ঢাবিতে ভর্তি, জাপানিজ স্টাডিজের চেয়ারম্যান অপসারিত

ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ না নিয়েই ভর্তির সুযোগ পান তিনজন।চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের অনিয়মিত স্নাতকোত্তর কোর্স ‘প্রফেশনাল মাস্টার্স ইন জাপানিজ স্টাডিজে (পিএমজেএস)।’অভিযোগ উঠে জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান এবং এই ভর্তি কমিটির প্রধান মো. জাহাঙ্গীর আলম জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিঠু চন্দ্র শীল এবং আরও দুইজন কর্মীকে অনিয়ম করে ভর্তি করান৷

এ বিষয়ে ২০২৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান এবং এই ভর্তি কমিটির প্রধান মো. জাহাঙ্গীর আলম অভিযুক্ত হলেও তৎকালীন বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য মাকসুদ কামালের কাছের লোক হওয়ার কারণে তিনি এই অনিয়ম করে পার পেয়ে যান। বিভিন্ন সময়ে ঢাবির সাবেক এই উপাচার্যের সঙ্গে অভিযুক্তই শিক্ষককে বিদেশ ভ্রমণ ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেও দেখা গেছে। সম্প্রতি অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বিভাগের শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিভাগে ভর্তি করানোর বিচার দাবি করে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।

এই দাবির প্রেক্ষিতে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনকে প্রধান করে গতকাল (বুধবার) রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে অভিযুক্ত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকবেন বলে জানানো হয়েছে।শুধু এই অভিযোগ নয়, এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে, তখন ছাত্রদের আন্দোলন থেকে বিরত রাখতে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেন অভিযুক্ত এই শিক্ষক। প্রতিবেদকের হাতে আসা একটি খুদে বার্তায় দেখা যায়, জুলাইয়ের ১৯ তারিখ বিকাল তিনটার দিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে বিরত রাখতে মোবাইলে মেসেজ পাঠায়।

জাপানিজ স্ট্রাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, জুলাই আন্দোলনে আমাদের বিভাগের একজন শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হন৷ তাকে আহত অবস্থায় শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়। তখন সেই শিক্ষার্থী বারাবর ফোন করেও বিভাগীয় প্রধান জাহাঙ্গীর আলমের কোন সাড়া পাননি৷ এমনকি ঘটনার পর বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানোর কথা বললেও তিনি তা করেননি৷ অভিযুক্ত শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বিবদ্যালয় শিক্ষকদের আওয়ামী লীগ সমর্থিত নীলদলের সক্রিয় সদস্য ছিলেন।

নীলদলের সমাজিক বিজ্ঞান অনুষদ আহ্বায়ক কমিটির ২০২৩-২৪ সেশনে যুগ্ম আহ্বায়ক পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে ৩৪ ভোট পেয়ে হেরে যান বলে জানা গেছে৷ সূত্র জানায়, আগস্টের ৩ তারিখ অপরাজেয় বাংলায় আয়োজিত নীল দলের সমাবেশে তিনি শুধু যুক্তই হননি, জুনিয়র শিক্ষকদের বাধ্য করান সমাবেশে যুক্ত হতে৷ এছাড়া তিনি নীল দলের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের যোগাযোগের মাধ্যম ছিলেন বলেও জানা গেছে।

ad-image

শেয়ার করুন


© 2024 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত NewsPediaBD

ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট করেছে GenRes